আজ আমি ঠিক করেছি ,দুপুরে চিকেনের কোনো টেস্টি মেনু রাঁধবো। বেশ কয়েকদিন চিকেনের কোনো মেনুই রাঁধিনি। বাড়ির সবাই চিকেন ভীষণভাবে পছন্দ করে। চিকেনের মেনু ,তাদের কাছে সবসময়েই স্পেশাল মেনু। চিকেন রান্না করলে খাবারে আর কিছুই চাই না। খুশি মনে খাওয়া দাওয়া। দেখেশুনে মনে হয় রোজ চিকেনের মেনু থাকলেও ওদের কোনো আপত্তি হবে না। আজকের প্রজন্ম তো চিকেন পাগল বটেই ,তবে আমরা যারা আমিষ পছন্দ করি ,তারা মনে হয় সবাই চিকেনের নানা
মেনুও পছন্দ করি। প্রোটিনে ভরপুর চিকেন কিন্তু প্রত্যেকেরই খাদ্য তালিকায় মাঝে মাঝেই অবশ্যই রাখা উচিত।
আজ আমার মেনু ''কসুরি মেথি দিয়ে চিকেন''। এক স্পেশাল মেনু। খেতে অসাধারণ। স্পেশাল স্বাদ ,স্পেশাল গন্ধে ভরপুর। কসুরি মেথি আসলে শুকনো মেথি পাতা। রান্না ঘরের এক দারুন উপকরণ। সুগার নিয়ন্ত্রণে ,হার্ট ভালো রাখতে ,রক্তাল্পলতা দূর করতে , হজম শক্তি ঠিক রাখতে ইত্যাদি আরো নানা উপকারী ভূমিকা রয়েছে কসুরি মেথির। মাঝে মাঝে মনে করে কসুরি মেথিকে রান্নার উপকরণ হিসাবে রাখা যেতেই পারে।
আজকের বাজারের লিস্টে চিকেন তো ছিলই আর ছিল কসুরি মেথি.........আরো অন্য কিছু .....। যথা সময়ে সব রান্নাঘরে পৌঁছে গেলো। বাড়ির সবাইয়ের খুশি খুশি মুখ। কসুরি মেথি চিকেন --গরম গরম ভাতে যেমন ভালো লাগে ,গরম গরম রুটির সঙ্গেও তেমনিই।
উপকরণ :-
চিকেন - ১কেজি ২০০ গ্রাম ( নরম্যাল সাইজে টুকরো টুকরো করে কাটা )
কসুরি মেথি - ২-৩ চামচ
পেঁয়াজ - ৮টি মাঝারি সাইজের ( মিহি করে মিক্সিতে বেটে রাখা )
রসুন বাটা - ২-৩ চামচ
আদা বাটা ২-৩ চামচ
কাঁচালঙ্কা - ৫-৬টি অর্ধেক করে কাটা
টমেটো - ১টি ( বড়ো সাইজের ,টুকরো টুকরো করে কাটা )
হলুদ গুঁড়ো - ৩ চামচ
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো - ১/২-১ চামচ
জিরে গুঁড়ো - ৪-৫ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
চিকেন হালকা করে ধুয়ে নিয়ে তেল আর নুন মাখিয়ে রেখে দিলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম পেঁয়াজবাটা ,আদা বাটা আর রসুন বাটা। আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে লাগলাম। একটু ভাজা ভাজা হয়ে এলেই দিলাম তেল নুন মাখানো
সমস্ত চিকেনটা। আর দিলাম সামান্য চিনি ,হলুদ গুঁড়ো। বেশি আঁচে কয়েকবার নেড়ে নিয়ে দিলাম জিরেগুঁড়ো কাটা টমেটোর টুকরোগুলো ,লাল লঙ্কাগুঁড়ো ,কাশ্মীরি লঙ্কাগুঁড়ো আর প্রয়োজনমতো আর একটু নুন।
কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সুন্দর করে কষতে লাগলাম। পাশের ওভেনে একটা পাত্রে গরম জলও চাপিয়ে দিয়েছিলাম।এদিকে মাংস কষার গন্ধে সমস্ত ঘর ভরে উঠলো।মাংস কষা ঠিক ঠাক হয়ে গেছে মনে হতেই রসার পরিমান ভেবে মাংসে গরম জল দিয়ে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ঝোল টগবগ করে ফুটতে লাগলো।
এইবার কসুরি মেথি কড়াইতে চিকেনের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে ,আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে চিকেন মজতে দিলাম। ওঃ ! আর পারা যাচ্ছে না। জিভে জল এসে যাচ্ছে। খাওয়া দাওয়া আর কতদূর ? ঘরের ভেতর থেকে নানা কথা ভেসে আসতেই লাগলো........।
কিছুক্ষন বাদে ঢাকা খুলে দেখি চিকেন নরম হয়ে গেছে। রান্নার স্বাদও দেখে নিলাম। সত্যিই খুব সুন্দর হয়েছে। রসার পরিমান ঠিক করে নিয়ে গ্যাস বন্ধ করলাম। সবাইকে ডাক দিলাম খাবার টেবিলে। গরম গরম ভাত আর বাটি ভরে ভরে কসুরি মেথি চিকেন। সবার আনন্দ আর দেখে কে। খুব তৃপ্তি করে ,খুশি মনে সবাই খাওয়া দাওয়া সারলাম। ২-১ জন বললো ,প্লিজ রাতে একটু রেখো। গরম গরম রুটি দিয়ে খাবো। বললাম সেটা আমি আগেই তুলে রেখেছি। সবাই বলে উঠলো দারুন ! দারুন ! খুব ভালো। খুবই ভালো।
সব্বাই খুব খুব ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,আনন্দে থাকুন।
Comments