ক - দিন ধরে অসহ্য গরম পড়েছিল। ভালো লাগছিলো না। কিন্তু আজ খুব ভালো লাগছে। আজ প্রকৃতি একেবারে ঠান্ডা ঠান্ডা।
কাল সকাল থেকেই আকাশ কেমন মেঘলা মেঘলা ছিল , রোদ ছিল না ,কিন্তু অসহ্য একটা গুমোট ভাব ছিল। কেমন যেন অস্বস্তি লাগছিলো। হঠাৎ সন্ধ্যের পরে দু -এক ফোঁটা বৃষ্টি পড়লো। হাওয়াটাও হালকা আরামদায়ক হয়ে গেলো। রাত প্রায় এগারোটা। জানলার কাছে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকাতে বেশ ভালো লাগছিলো। সামনের রাস্তাটা আলোয় ঝলমল করছে।বাচ্চাদের ছোট পার্ক টাও আলোয় ভরপুর। পার্কের গাছের পাতাগুলো চিক চিক করছিলো । রাস্তায় কোনো লোকজন নেই। কিন্তু একটুও ফাঁকা মনেই হচ্ছিলো না।মনে মনে বললাম কাল যদি এমন ওয়েদার থাকে ,তবে একটু মশলাদার রান্না করা যেতেই পারে।
সকালে ঘুম ভেঙে মনে হলো বৃষ্টি হয়েছে। সামনের রাস্তাটা বেশ ভেজা। ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়াতে কেমন যেন শীত শীত ভাব। খুব ভালো লাগছিলো। ভীষণ স্বস্তি। কি রান্না করবো ,সেটা কাল রাতেই কিছুটা ঠিক করেই রেখেছিলাম। সেই অনুযায়ী বাজার আনতেও বলে দিলাম। বাজার এসেও গেলো।
আজ আমি নিরামিষ পদে রাঁধবো ,ঘি ,গরম মশলা দিয়ে কুমড়ো - আলু - পটোলের ডালনা। গরম ভাতে দারুন !সকালের কাজ শেষ করে ,দুপুরের রান্নায় মন দিলাম। দুপুরের রান্নার প্রথম মেনু কুমড়ো - আলু - পটোলের ডালনা।
উপকরণ :-
কুমড়ো - ৫০০ গ্রাম ( খোসা ছাড়িয়ে ডুমো ডুমো করে কাটা )
পটল - ৫০০ গ্রাম (অল্প অল্প খোসা ছাড়িয়ে মাঝামাঝি অর্ধেক করে কাটা )
আলু - ৫-৬টি মাঝারি সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে প্রত্যেকটি ৪ টুকরো করে কাটা )
আদা - ১ ইঞ্চি মতো ( খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে রাখা )
রসুন - খুব ছোট্ট একটা ( কোয়া গুলো ছাড়িয়ে রাখা )
কাঁচালঙ্কা - ৫-৬টি গোটা
টমেটো - ১টি মাঝারি সাইজের ( ৪ টুকরো করে কাটা )
গোটা শুকনো লঙ্কা - ২টি ( একটু করে ফাটানো )
তেজপাতা - ২টি মাঝারি সাইজের
গোটা জিরে - ১ -১.৫ চামচ
জিরেগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
হলুদ গুঁড়ো - ১.৫-২ চামচ
লাল লঙ্কা গুঁড়ো - ১/২-১ চামচ ( ইচ্ছে না হলে ,নাও দিতে পারেন )
ঘি - ১- ১.৫ চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো - ১/২ - ১ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
মিক্সিতে জলে ধোয়া আদা , রসুন,কাঁচালঙ্কা নিয়ে বেটে রাখলাম। গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে তেল দিলাম। তেল গরম হলে আঁচ কমিয়ে দিলাম গোটা জিরে ,ফাটানো শুকনোলঙ্কা ,জলে ধোয়া আলু আর ২টি তেজপাতা ।আঁচ বাড়িয়ে ভালো করে ভাজতে লাগলাম। আলুতে হালকা রং ধরলে দিলাম জলে ধোয়া কাটা পটোলের টুকরো গুলো। আলু আর পটল একসঙ্গে আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে ভাজতে লাগলাম। দিলাম হলুদের গুঁড়ো ,নুন আর চিনি। কয়েকবার ভালোকরে নেড়েচেড়ে দিলাম ,আদা রসুন লঙ্কাবাটা আর টমেটোর টুকরো গুলো।
ভালো করে কষতে লাগলাম ,দিলাম জলে ধোয়া কুমড়োর টুকরোগুলো। আবারো আঁচ
বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে নাড়তে ,ভাজা ভাজা গন্ধ বেরোতেই ,দিলাম জিরেগুঁড়ো। দু - একবার নেড়েচেড়ে নিয়ে রসার পরিমান ভেবে জল দিলাম।
বেশি আঁচে জল ফুটে উঠলে ,আঁচ কমিয়ে হালকা ঢাকা দিয়ে তরকারি হতে দিলাম। ওঃ! দারুন গন্ধে রান্নাঘর ভরে উঠেছে। কিছুক্ষন বাদে ঢাকা খুলে প্রথমেই দেখলাম ,তরকারি সুসিদ্ধ হয়েছে কিনা ,তারপর দেখলাম রান্নার স্বাদ।দারুন লাগছে। ঘরের ভিতর থেকে আওয়াজ আসছে ,খিদে পেয়ে গেছে ,কখন খাবো ? আর পারছি না। কোনো কথায় কান না দিয়ে রান্নায় ঘি ,গরম মশলা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে রান্না শেষ করলাম। গ্যাসও বন্ধ করলাম।
খাবার টেবিলে সবার এক কথা ,ভীষণ ভালো রেঁধেছ !কেউ কেউ বলেই ফেললো: ভাগ্যিস ওয়েদারটা সুন্দর হয়েছে ! তাই সব স্পেশাল স্পেশাল মেনু। দারুন ! দারুন !! আর দারুন!!।
সব চাইতে বড়ো কথা খাওয়া দাওয়া খুব ভালো মনে হলো। খুব খুশি খুশি মনে হলো আর ভীষণ আনন্দের সঙ্গে হলো।
সবাই ভালো থাকুন ,খুশি খুশি মনে থাকুন আর আনন্দে তো থাকতে হবেই।
Kommentare