ওঃ ! কি সুন্দর কচি কচি সবুজ ধনেপাতাগুলো | বাজারের থলিটার উপর থেকে উঁকি মারছে | সবুজ সবুজ যে কোনো গাছের পাতা -----দেখতে কিন্তু অসাধারণ লাগে | আচ্ছা দেখি আজ বাজারে কি কি এসেছে ! দেখি ! দেখিতো !------ধনেপাতা ,কাঁচালঙ্কা ,ফুলকপি ,আলু ,পেঁয়াজ ,রসুন , আদা ,টমেটো ----আর মাছে রয়েছে ৩০০ - ৩৫০ গ্রামের মতো চাপড়া চিংড়ি ! ব্যাস আজকের এই বাজার ! ঠিক আছে ! ঠিক আছে !! ---- আজকে চিংড়ি ধনেপাতারই ম্যাজিক হবে |
আজ আমি ভেবে ফেলেছি ,দুপুরের অবশ্যই একটা মেনু রাঁধবো ,খুব টেস্টি টেস্টি ধনিয়া - চিংড়ি | গরম ভাতে মেখে খেতে দারুন | এত্তো সুন্দর লাগে যে ----মুখ অপূর্ব স্বাদে ভরে যায় | মাঝে মাঝে এই ধরণের মেনু গুলো কিন্তু খাবার টেবিলে ----এক দারুন চমক | আজকেও আমার রান্নাঘরে চমক হবে |
চিংড়ি মাছ এক স্পেশাল স্বাদে ভরা | যে রান্নাতেই অল্প দাও না কেনো ------ রান্নাটা কেমন যেন স্বাদগুণে অসাধারণ হয়ে উঠবেই |
বেশির ভাগ মানুষ চিংড়ি মাছ খেতে ভালো ও বাসে | তাই রান্নাঘরে চিংড়ির যে কোনো মেনু মানেই ---সেই দিনের নিশ্চিন্তি | সবাই আনন্দ করে ,উপভোগ করেই খাওয়া দাওয়া করবে |
চিংড়ি মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম |ধনেপাতাও বেছে নিয়ে জলে ভিজিয়ে দিলাম | এদিকের কাজকর্ম শেষ হলে ধনিয়া - চিংড়ি রাঁধবো | বেশি সময় তো লাগবেই না |-------ধীরে ধীরে অন্য কাজ কর্ম ও শেষ করে ফেললাম | এবার মনো চলো ---রান্নাঘরে ---ধনিয়া - চিংড়ি রান্না করতে ---------
উপকরণ :-
চাপড়া চিংড়ি -৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম মতো নিয়েছি ( পরিষ্কার করে ধুয়ে নুন , হলুদ মাখানো )
ধনেপাতা - খুব কচি কচি ,দু - আঁটি ( বেছে পরিষ্কর করে জলে ভেজানো )
পেঁয়াজ - ২টি ,খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা
রসুন - ১২-১৩ কোয়া ,খোসা ছাড়ানো
আদা ১/২ ইঞ্চি মতো ,খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা
কাঁচালঙ্কা - ১০ - ১৫ টা , নিজের নিজের ইচ্ছামতো
হলুদ - ১ থেকে ১.৫ চামচ মতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
রান্নাঘরে ঢুকে প্রথমেই মিক্সিতে জল ঝরানো ধনেপাতাগুলো নিয়ে মিহি করে বেটে নিলাম | বাটা ধনেপাতা একটা পাত্রে ঢেলে রাখলাম | তারপর মিক্সিতে পেঁয়াজের টুকরো ,আদার টুকরো ,রসুনের কোয়া ,আর কাঁচালঙ্কা নিয়ে বেটে রাখলাম |
গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে একটু তেল দিলাম | তেল গরম হতেই নুন,হলুদ মাখানো চিংড়িমাছগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে চিংড়ি মাছগুলো একটু ভাপিয়ে রাখলাম |এবার কড়াই পরিষ্কার করে আবার গ্যাসে
চাপলাম | প্রয়োজনমতো তেল দিলাম |তেল গরম হতেই দিলাম পেঁয়াজ ,রসুন ,আদা ,কাঁচালঙ্কা বাটাটা |
আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সমস্ত মিশ্রণ ভালোকরে নাড়তে লাগলাম |দিলাম প্রয়োজনমতো হলুদ ,নুন আর চিনি | আবারো সমস্ত মশলা ভালো করে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম | ভাজা হয়ে এসেছে মনে হতেই ,আঁচ কমিয়ে দিলাম ধনেপাতা বাটা | আঁচ বাড়িয়ে ধনেপাতা বাটা সমেত কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ ভালো করে কষতে লাগলাম | ধনেপাতা ভাজা ভাজা গন্ধ বেরোতেই ,সাঁতলানো সমস্ত চিংড়ি কড়াইতে দিয়ে দিলাম |
আঁচ কমিয়ে কড়াইতে একটা ঢাকা দিয়ে ,রান্না একটু হতে দিলাম |চিংড়ি আর ধনেপাতা মিশ্রনের সুন্দর গন্ধে আমার রান্নাঘ ম ---ম ---করছে | রান্নাঘরের বাইরে থেকে প্রশ্ন ------কি রাঁধছ গো ? আহা - হা - হা ,অপূর্ব ! -----অপূর্ব ! অসাধারণ !-----বললাম -----সবাই স্নান - টান করে খাবার টেবিলে এসো | আজ তোমাদের খাওয়াবো ধনিয়া - চিংড়ি-------------
সবাই তো ভীষণ খুশি | অনেকদিন বাদে তাদের প্রিয় ধনিয়া - চিংড়ি | গন্ধতে তো তারা কিছুটা আন্দাজ করেই ফেলেছিলো |এখন নিজেদের পাতে ধনিয়া চিংড়ি দেখে সবাই আনন্দে উচ্ছ্বসিত |গরম গরম ভাত ----সঙ্গে গরম গরম ধনিয়া - চিংড়ি -----দারুন ! দারুন ! জমে উঠলো | খুব আনন্দে- আহ্লাদে সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করলো | একজন বলেই ফেললো -----ধনিয়া - চিংড়ি ---জিন্দাবাদ ! অবাক হয়ে ভাবছি ,কতো অল্পতেই সবাই কত্তো খুশি -------এখন তো শীতকালের কচি কচি ধনেপাতাগুলো দারুন ! দারুন টেস্টি টেস্টি ! চিংড়ি ও স্বাদে দারুন !তাহলে মাঝে মাঝে চিংড়ি - ধনেপাতার কোনো কোনো মেনু রাঁধা যেতেই পারে -------!!!
আপনারাও খুব খুব খুশি খুশি থাকুন ,ভালো থাকুন আর সুস্থ থাকুন |
Comments