top of page

কাবলি - ছোলার - তরকারি

Writer's picture: Kaveri NandiKaveri Nandi

এখন তো প্রায়ই একটা কথা বার বার শোনা যাচ্ছে .......ইমিউনিটি বাড়াও....ইমিউনিটি বাড়াও .....আমাদের সব্বাইয়ের ইমিউনিটি বাড়াতে হবে | কিন্তু আমার তো মনে হয় .....আদি অনন্তকাল থেকে ঘরে ঘরে প্রত্যেক সু - গৃহিণীর তো সবসময়ে একটাই চিন্তা ....বাড়ির সবাইকে সুস্থ রাখতে হবে ....আনন্দে রাখতে হবে | আর তাইতো প্রতি রান্নাঘরে নিত্য নতুন সুন্দর সুন্দর রান্না ......রান্নার আবিষ্কার ..শুধুই আমাদের ভালো রাখতে আর অনেক অনেক আনন্দে রাখতে |


তা ছাড়া আমরা আমাদের রান্নাঘরে ,রান্নার উপকরণ হিসাবে যা যা মশলা ,শাকসবজি ,চাল - ডাল ,মাছ - মাংস - ডিম, দুধ ,ঘি ............যাই ব্যবহার করি না কেনো .....তার সবই কোনো না খাদ্যগুণে ভরপুর | শুধু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা ভাবে তাদের ব্যবহার করলেই ......মনে হয় অনেক সমস্যাই দূর হয়ে যাবেই যাবে | তবে আমাদের ,মানে বাড়ির সমস্ত সদস্যদের কিন্তু খুশি মনে ,আনন্দের সঙ্গে আর অনেক অনেক উপভোগ করেই সব খাবার ....সমস্ত রান্নাবান্না চেটেপুটে খেতে হবে | আর ঠিক তখনিই হবে শরীরের ইম্যুনিটির জয় - জয়কার | আমার নিশ্চিত ধারণা ....মনে আনন্দ - মনে খুশি .......অনেক অনেক কিছু জয় করারই ক্ষমতা ............


কাবলি ছোলা প্রোটিনে ঠাসা এক দারুন উপকরণ | যার যে কোনো পদই..... রুটি ,পরোটা নান ,কুলচার সঙ্গে দারুন জমে যাবেই যাবে | আমি আজ সকালে জলখাবারে রুটির সঙ্গে কাবলি ছোলার তরকারি রান্না করে দেবো

ভেবেই ,রাতে শুতে যাওয়ার আগে ৫০০ গ্রামের মতো কাবলি ছোলা ,ভালো করে ধুয়ে একটা পাত্রে জলে ভিজিয়ে দিয়ে ,একটা হালকা ঢাকা দিয়ে রেখে ছিলাম | কিন্তু ক - দিন কালো গোমড়া আকাশের পর হঠাৎ সকালে ঘুম ভেঙে শীত জমানো রোদ - ঝলমল দিনটা দেখেই ,মনটা যেনো একরাশ সুন্দর খুশিতে ভরে গেলো | বাড়ির সবাই খুশিতে ঝলমল .....সারা বাড়িটাই যেনো ঝলমল ঝলমল করছে |


সঙ্গে সঙ্গে ঠিক করে ফেললাম ,জলখাবারে সবার পছন্দের এমন কিছু তৈরি করবো ...যা আমার মুখরোচক কাবলি - ছোলার সঙ্গে দারুন খেতে লাগবে......আর সেটা হলো ছোলার ডালের ডালপুরি | খুব সুন্দর চিন্তা ..খুবই সুন্দর ভাবনা | সবাইকে খুব খুশি করে দেবো ভেবে .....নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে নিলাম | আমি আজ খুব খুশি ......খুবই খুশি আমি আজ ...............


সবাইকে সুন্দর করে গরম গরম চা আর বিস্কুট খাইয়েই ,তাড়াতাড়ি রান্নাঘরে ঢুকে পড়লাম কাবলি - ছোলার মুখরোচক পদটি রান্নার জন্য .........এরপর তো আবার ডাল -পুরি তৈরি করতে হবে .....অনেক কাজ .....অনেক কাজ .....আর ঠিকঠাক সময়ে জলখাবার টা তো দিতেই হবে .....তাই না ?


উপকরণ :-

  • কাবলি ছোলা - ৫০০ গ্রাম

  • পেঁয়াজ - ৪টি ,মাঝারি সাইজের ( মিহি করে কুচানো, অল্প অল্প থেঁতো করা )

  • আদা - ইঞ্চি খানেক ( ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করা )

  • রসুন - ১৪ -১৫ কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে রাখা )

  • কাঁচালঙ্কা - ৩-৪ টি গোটা

  • টমেটো - ১টা ,মাঝারি সাইজের ( কুচিয়ে রাখা )

  • হলুদ গুঁড়ো - ১ - ১.৫ চামচ

  • জিরে গুঁড়ো - ২-৩ চামচ

  • লাল লঙ্কা গুঁড়ো - ১/২ থেকে ১ চামচ মতো ( ঝাল নিজের নিজের পছন্দ মতো )

  • নুন - প্রয়োজনমতো

  • চিনি - প্রয়োজনমতো ( অল্প লাগবেই ,না হলে ঠিক তাক তাক হবে না )

  • সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো


পদ্ধতি :-


রান্না ঘরে ঢুকে প্রথমেই জলে ভেজানো কাবলি ছোলা ,জল ঝরিয়ে প্রেসার কুকারে নিয়ে ,আবার খানিকটা নতুন জল দিয়ে প্রেসার কুকারের মুখ বন্ধ করে গ্যাসে বসালাম | এইবার কেটে রাখা আদার টুকরোগুলো ,রসুনের কোয়াগুলো আর গোটা কাঁচালঙ্কা গুলো ভালো করে ধুয়ে নিয়ে মিক্সিতে ভালো করে বেটে রাখলাম | বেশ কয়েকটা প্রেসারে সিটি পরে কাবলি ছোলা ভালো মতো সেদ্ধ হয়ে যেতেই ,প্রেসার গ্যাসের উপর থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিলাম |


এখন গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল গরম হতেই কুচানো পেঁয়াজ কড়াইতে দিয়ে দিলাম | দিলাম খানিকটা নুন | নুনে পেঁয়াজ তাড়াতাড়ি মজে যাবে |আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কুচানো পেঁয়াজ নাড়াচাড়া করে মজিয়ে নিলাম | পেঁয়াজ বেশ নরম হয়ে যেতেই আঁচ বাড়িয়ে কড়াইতে দিলাম ,আদা - রসুন - কাঁচালঙ্কা বাটা | একটু নেড়েচেড়ে নিয়ে দিলাম কুচানো টমেটোর টুকরোগুলো | দিলাম হলুদগুঁড়ো আর প্রয়োজনমতো চিনি |


আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে নাড়তে লাগলাম | পেঁয়াজ -রসুন ঠিকমতো ভাজা হয়ে গেছে মনে হতেই ,আঁচ কমিয়ে ,প্রেসার কুকার থেকে জল ঝরিয়ে সেদ্ধ কাবলি - ছোলা গুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম |দিলাম জিরে গুঁড়ো আর লাল লঙ্কা

গুঁড়ো | আঁচ বাড়িয়ে কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ ভা.........লো করে কষতে থাকলাম | মশলা কষার সুন্দর গন্ধে রান্নাঘর ভরে উঠতেই , রসার পরিমান ভেবে নিয়ে কড়াইতে একটু কুসুম কুসুম গরম জল দিলাম |


কড়াইয়ের সমস্ত তরকারি টগবগ করে ফুটে উঠতেই ,আঁচ কমিয়ে একটা ঢাকা দিয়ে রান্না একটু হতে দিলাম | কম

আঁচে রান্না একটু মজে গেলেই সমস্ত মশলা সুন্দর ভাবে রান্নায় মিশে যাবে ....আর রান্নার স্বাদ ও অনেক বেড়ে যাবে | ছোলার তরকারির সুন্দর গন্ধ বের হতেই ,ঢাকা খুলে রান্নার স্বাদ চেখে নিলাম | বাঃ ! বাঃ ! খুবই সুন্দর খেতে হয়েছে | আঁচ বাড়িয়ে রসার পরিমান ঠিকঠাক করে নিয়েই গ্যাস বন্ধ করে দিলাম | সমস্ত রান্না একটা পাত্রে ঢেলে ,ঢাকা দিয়ে রাখলাম ...........ডালপুরির সঙ্গে সবার পাতে পাতে পরিবেশনের জন্য ...............................................


ঘরের বাইরে সকালে মিষ্টি রোদের মন -কারা হাসি ...........আর আমার ঘরের মধ্যে জলখাবারের টেবিলের সদস্যদের খুশির জোয়ারে ভেসে যাওয়ার হাসি .......ভেবেই পাচ্ছি নাতো ...কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখি !!!...........সবটাই যে বড়োই মধুর ,বড়োই তৃপ্তির আর অনেক অনেক আনন্দের .......


সব্বাই মিলে খুব খুব ভালো থাকুন ,খুশিতে ভরে থাকুন আর একদম সুস্থ থেকে .....থাকুন অনেক অনেক আনন্দে |


১৭৬ views০ comment

Recent Posts

See All

Comments


bottom of page