ছোট ছোট রুই - কাতলার পোনা ........সব বাঙালিরই বড়োই প্রিয় | ইমিউনিটি তে ভরপুর এই পোনামাছ ছোট থেকে বড়ো সবার জন্যই খুব উপকারী | শরীরের শক্তি বাড়াতে ,চোখ ভালো রাখতে ,হাড় কে মজবুত করতে ,প্রোটিনের মাত্রা বাড়াতে এই পোনামাছের ভূমিকা অসীম | খুব সহজেই হজম হয়ে যায় , তাই পেটের জন্য ও খুব ভালো | আর তাইতো রুগীর পথ্যতে এই পোনামাছের হালকা মেনু খুব উপকারী |
অনেক অনেক বাঙালি এই পোনামাছ এতোই পছন্দ করে যে ,তাদের বাজারের থলিতে প্রায় রোজই এই মাছ দেখতে পাওয়া যাবেই | শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তাদের কাছে এই মাছের গুরুত্ব খুব বেশি | গ্রামের মানুষজন তো পোনামাছের সর্ষে - ঝাল পেলে আর কিছুই চায় না | তাদের খুব প্রিয় এক মেনু |
আমিও আজ ঠিক করেই ফেলেছি খুব মুখরোচক করে রাঁধবো ....সর্ষে ,পোস্ত আর কচু দিয়ে পোনামাছের রসা | গরম ভাতে একেবারে অসাধারণ ! সর্ষে - পোস্তোয় - তাক তাক পোনামাছের
ঝাল একবার খেলেই ......আমি নিশ্চিত বার বার খেতে ইচ্ছে করবেই করবে |
বাজারের থলিতে রুই মাছের পোনা গুলো দেখেই ভেবে ফেলে ছিলাম , সর্ষে পোস্ত দিয়ে মাছগুলো রাঁধবো | তারপর সবজির থলিতে মুখীকচু গুলো দেখে ভাবলাম ,পোনামাছের সর্ষে - পোস্ত ঝালে মুখীকচু দিয়ে দেবো | মনে হয় আরোও ভালো লাগবে | ভাবতে ভাবতেই ভেবে ফেললাম ......ঠিক আছে .....ঠিক আছে আগে রান্না তো করে ফেলি , তারপর খাবার টেবিলে সব কিছুই বোঝা যাবে |
প্রথমেই পরিমাণমতো সর্ষে আর পোস্ত জলে ভিজিয়ে দিলাম | পোনামাছগুলো পরিষ্কার করে বার বার জলে ধুয়ে নিয়ে নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম |সকালের সমস্ত কাজ কর্ম শেষ হতেই , পোনা মাছের ঝাল রান্নায় মন দিলাম |
উপকরণ :-
রুই মাছের পোনা - ৭৫০ গ্রাম
মুখী কচু - ৫০০ গ্রাম ( ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে লম্বালম্বি দু - টুকরো করে কাটা আর জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখা )
পেঁয়াজ - খুব ছোট্ট ছোট্ট দু - টি ( একেবারে মিহি করে কুচানো )
কাঁচালঙ্কা - ৮-১০ টি ( লম্বালম্বি দু - ভাগে চেরা )
গোটা সর্ষে - ৩-৪ চামচ
পোস্ত - ৩-৪ চামচ
পাঁচফোড়ন - ১ চামচ
হলুদ - ২-৩ চামচ
লাল লঙ্কা গুঁড়ো - ২ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - রান্নার রং আর স্বাদের জন্য অল্প
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
রান্নাঘরে ঢুকে প্রথমেই সর্ষে আর পোস্ত মিক্সিতে নিয়ে খুব মিহি করে বেটে নিলাম | গ্যাসে কড়াই চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো তেল | তেল গরম হতেই ,পোনামাছগুলো কড়া করে ভেজে তুলে রাখলাম | মাছ ভাজার পর কড়াই পরিষ্কার করে নিয়ে ,রান্নার প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল গরম হলে , ওই তেলের মধ্যে দিলাম পাঁচফোড়ন ,মিহি করে কুচানো পেঁয়াজ আর কয়েকটা চেরা কাঁচালঙ্কা |
আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পেঁয়াজ একটু নাড়াচাড়া করে নিয়ে দিলাম ,মুখী কচুর টুকরোগুলো |বেশি আঁচে সমস্ত উপকরণ নাড়তে লাগলাম | কচুতে হালকা ভাজা ভাজা রং ধরে আসতেই ,আঁচ কমিয়ে দিলাম কয়েকদানা চিনি ,হলুদ আর
নুন | আবারো আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে একটু নেড়ে নিয়ে কড়াইতে দিলাম , সর্ষে - পোস্তর মিহি করে বাটা মিশ্রণ | বেশি আঁচে মিশ্রণ ফুটতে শুরু করলো |
মিশ্রনের জল শুকিয়ে ,তেল বার হতে শুরু হলেই ,রসার পরিমান ঠিক করে নিয়ে দিলাম জল | বেশি আঁচে রসা ফুটতে শুরু করলেই ,রসাতে দিলাম প্রয়োজনমতো লাল লংকার গুঁড়ো | আঁচ কমিয়ে হালকা ঢাকা দিয়ে রান্না মজতে দিলাম | রসাতে মুখীকচু নরম হয়ে আসতেই ,আঁচ বাড়িয়ে রসার মধ্যে দিলাম ভাজা পোনামাছ গুলো | ছড়িয়ে দিলাম বাকি অর্ধেক করে কাটা কাঁচালংকার টুকরোগুলো |
বেশি আঁচে রান্না হতে লাগলো | রসার পরিমান ঠিক হয়ে যেতেই ,রান্নার স্বাদ ও দেখে নিলাম | খেতে কিন্তু বড়োই ভালো হয়েছে | বেশ তাক তাক ,আর খুব মুখরোচক হয়েছে | এবার সবার ভালো লাগলেই................ আমি খুশি |
খাবার টেবিলে দেখলাম সব্বাই খুব খুশি | ওঃ ! কি দারুন রেঁধেছ গো ! ........কেউ কেউ বলে উঠলো আহা হা হা ......রান্না খেয়ে মুখ যে স্বাদে ভরে গেলো .......| আমি ও খেতে বসে দেখলাম গরম ভাত আর কচু দিয়ে পোনামাছের রসা ......অসাধারণ লাগছে .....স্বাদে অসাধারণ !এবার .... খুব খুব খুশি আমি |
আপনারাও খুশিতে ভরে থাকুন ,সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন ,অনেক আনন্দে থাকুন |
Comments