সকালের বাজার তো এসেই গেছে | দেখাই যাক ....কি বাজার এলো ? ওমা ! একী ! ....একী !.....দারুন ! দারুন ! বাজারের থলিটা একটু ফাঁক করতেই কয়েকটা জ্যান্ত কুচো চিংড়ি চারিদিকে ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে | তাড়াতাড়ি থলির মুখটা বন্ধ করে দিয়ে ,সাবধানে কুচো চিংড়িগুলো একটা বড়ো পাত্রে ঢেলে ঢাকা দিয়ে রাখলাম | বাঃ ! কুচো চিংড়িগুলো দেখে মন আনন্দে ভরে গেলো | অনেকদিন বাদে এতো টাটকা কুচো চিংড়ি !
মনের আনন্দে ভাবতে শুরু করলাম , এই টাটকা চিংড়ি গুলো কি ভাবে রাঁধলে সবারই ভালো লাগবে ! আজ তো দুপুরে পেঁয়াজ ফোড়নে মুসুরির ডাল রেঁধেছি , আর মেনুতে গন্ধরাজ লেবু ও রয়েছে , তাহলে পেঁয়াজ দিয়ে কুচো চিংড়ির চচ্চড়ি আর গরম গরম ভাত তো মনে হয় স্বাদগুনে দারুন জমে উঠবে | পেঁয়াজ আর ধনেপাতা দিয়ে কুচো চিংড়ির ভাজা ভাজা রান্নাটা দারুন মুখরোচক | ভালো তো লাগবেই লাগবে |
খুব সাবধানে কুচো চিংড়ি গুলো ,খুব ভালো করে বেছে নিয়ে বার বার জলে ধুয়ে নিয়ে ,নুন আর হলুদ মাখিয়ে রাখলাম | সকালের বাকি কাজগুলো শেষ হলেই কুচো - চিংড়ির - চচ্চড়ি রেঁধে ফেলবো |গরম গরম ভাত আর গরম গরম চিংড়ি - চচ্চড়ি .............আহা - হা ----মনে হতেই জিভে জল ...........|
উপকরণ :-
কুচো - চিংড়ি - খোসা সমেত ৩৫০ গ্রাম ( রান্নার আগে সুন্দর করে খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করা )
পেঁয়াজ - ৬টি ,একটু বড়ো সাইজের , কুচিয়ে রাখা
কচি ধনেপাতা - কুচানো ,১ কাপ মতো
কাঁচালঙ্কা - ৭-৮ টা অর্ধেক করে চেরা ,৪-৫টা গোটা
পাঁচফোড়ন - ১/২ - ১ চামচ
হলুদ - ১-২ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল গরম হতেই আঁচ কমিয়ে দিলাম পাঁচফোড়ন | দিলাম কুচানো পেঁয়াজ আর অর্ধেক করে কাটা কাঁচালংকার টুকরোগুলো | আঁচ বাড়িয়ে সমস্ত উপকরণ ভালো করে নাড়তে লাগলাম | দিলাম অল্প নুন ,অল্প হলুদ গুঁড়ো আর কয়েকদানা চিনি ( রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য )| আঁচ বাড়িয়ে
কমিয়ে কুচানো পেঁয়াজ মজিয়ে নিতে লাগলাম |
পেঁয়াজ বেশ নরম হয়ে গেছে মনে হতেই ,আঁচ কমিয়ে হলুদ মাখানো কুচো চিংড়ি গুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | এবার আঁচ বাড়িয়ে কুচো চিংড়ি সমেত সমস্ত উপকরণ ভালো করে নাড়াচাড়া করতে লাগলাম | চিংড়ি আর পেঁয়াজ ভাজার সুন্দর গন্ধ বার হতে শুরু করলেই , আঁচ কমিয়ে জলে ধোওয়া জল ঝরানো কুচানো ধনেপাতাগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম | আবার আঁচ বাড়িয়ে সব ভালো করে নাড়তে লাগলাম |
ওহঃ -হো - হো .....কি দারুন গন্ধ ! আঁচ কমিয়ে কড়াইয়ের সমস্ত উপকরণ মজতে দিলাম | এবার আঁচ বাড়িয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে ,আবার আঁচ কমিয়ে রান্না মজতে দিলাম |এইভাবে কয়েকবার করার পর ,যখন পেঁয়াজ ,ধনেপাতা , কাঁচালঙ্কা আর কুচো চিংড়ি একে অপরের সঙ্গে ভালোমতো মিশে গেলো ,তখন রান্নার স্বাদ দেখে নিলাম|
সব ঠিক মতো তো হয়েইছে ,আর খেতে তো দুর্দান্ত হয়েছে , একেবারে অসাধারণ ! দারুন ! দারুন ! গ্যাস বন্ধ করে রান্নায়
একটা ঢাকা দিয়ে রাখলাম ,খাবার টেবিলের অপেক্ষায় |আশ্চর্য্য ! খাবার টেবিলে কিন্তু কারো মুখেই কোনো কথা নেই | শুধু মন দিয়ে খাওয়া - দাওয়া | তবে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম ,সবার চোখে মুখেই যেনো অনেক শান্তি ,অনেক স্বস্তি আর অফুরন্ত আনন্দের এক আমেজ | যাক বাবাঃ ! আমারও নিশ্চিন্তি |এর মধ্যে ২-১ জন শুধু গরম গরম ভাত আর কুচো - চিংড়ি - চচ্চড়ি দিয়ে ভাত খাওয়ায় মন দিয়েছে | আমিও কিন্তু ডাল খাচ্ছি না ,নিয়েছি গরম গরম ভাত আর সঙ্গে আমার বড়োই প্রিয় কুচো - চিংড়ি - চচ্চড়ি | আহা - হা মুখ তো স্বাদে ভরে যাচ্ছেই ,আর মনটাও যে ভরে ভরে যাচ্ছে শান্তিতে, স্বস্তিতে অনেক অনেক আনন্দে |
একবার রান্নাটা করেই ফেলুন আর খেয়েও দেখুন না ! বড়োই সোজা সাপ্টা রান্না অথচ বড়োই মুখরোচক রান্না |
সবাই খুব ভালো থাকুন | শীতের আমেজে ভালো ভালো খান , সুস্থ থাকুন ,থাকুন অনেক অ...........নেক আনন্দে |
Коментарі