তিল - পোস্ত - আর -কুমড়োর - ফুল (kumro-phuler-bora)
- Kaveri Nandi

- Aug 1
- 3 min read

গরম ভাতে প্রথম পাতে গরম গরম যে কোনো মুখরোচক ভাজি , খাওয়ার আনন্দটাকে বোধহয় সবচাইতে বেশি বাড়িয়ে দেয় | গরম গরম ভাত , গরম গরম ডাল , গরম গরম ভাজি আর একটুকরো কাটা লেবু .....বাচ্চা - বড়ো সব্বাইয়ের যেনো খাওয়ার আনন্দে ...অনেক অনেক খুশির হাওয়া ছড়িয়ে দেয় | এই ধরণের মেনু মানেই ....অন্য যে কোনো মেনুকে ভুলে যাওয়াটা খুব একটা অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার নয় | বরঞ্চ ...এটাই বেশ স্বাভাবিক .........

আমার রান্নাঘরেও প্রায় ই থাকে নানা সবজির নানা - নানা ধরণের মুখরোচক ভাজি মেনু | গরমের আবহাওয়ায় গরম গরম ডাল - ভাত আর সঙ্গে একটা মুচমুচে ভাজি ....... আমার পরিবারের সব্বাইকে ...তৃপ্তির অনেক অনেক আনন্দেই ভরিয়ে দেয় | আর ?? আর ,আবার বলি এটাই তো স্বাভাবিক ....তাই না ???

আমি আজকে ভাজার মেনুতে রেখেছি কয়েকটা তিল আর কয়েকটা পোস্ত ছেটানো কুমড়োফুলের মুচমুচে বড়া | গরম ভাতে প্রথম পাতে কুমড়োফুলের খান - কয়েক মুচমুচে বড়া আর একটু ঘি .....বড়োই স্বাদিষ্ট ...বড়োই মুখরোচক !!! আর কিছু না হলেও চলে ....খাওয়ার ইচ্ছেটা মাঝে মধ্যে নিজের মতো ও করা যেতেই পারে | আমার জন্য আজকের মেনু ...গরম গরম ভাত আর গরম গরম কুমড়োফুলের মুখরোচক বড়াভাজা | অবশ্য অন্যদের জন্য অন্য কিছু ও ভেবে রেখেছি | তবে আজকের স্পেশাল মেনু '' তিল আর পোস্ত দিয়ে কুমড়োফুলের মুচমুচে বড়া '' (kumro-phuler-bora) |
উপকরণ :-
কুমড়োরফুল - ২৬ - ২৭ পিস্ , সতেজ আর খুব খুব টাটকা , ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে রাখা
আদা - ইঞ্চি খানেক , একটা ছোট্ট টুকরো
কাঁচালঙ্কা - ৮-৯টা
বেসন -৮-৯ চামচ
কর্ণফ্লাওয়ার - ১ চামচ
চালের গুঁড়ো - ২ চামচ
গোটা পোস্ত - ২-৩ চামচ
গোটা সাদা তিল - ২-৩ চামচ
চিনি - প্রয়োজনমতো
নুন - প্রয়োজনমতো
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো , যে কোনো তেলেই ভাজা ভালো হবে , তবে আমি ভাজবো সর্ষের তেলে , আমার প্রিয় তেল
পদ্ধতি :-
কুমড়োফুল ভাজার শুরুর প্রথমেই শুকনো কড়াইতে গোটা পোস্ত আর সাদা তিল আলাদা আলাদা করে হালকা করে রোস্ট করে আলাদা আলাদা পাত্রে রেখে দিলাম | আদা আর কাঁচালঙ্কা মিক্সিতে নিয়ে মিহি করে বেটে রাখলাম | এবার একটা পাত্র নিয়ে , তার মধ্যে একে একে নিলাম , বেসন , চালের গুঁড়ো , কর্ণফ্লাওয়ার , আদা - কাঁচালঙ্কা বাটা , নুন আর প্রয়োজনমতো চিনি | একটু একটু করে জল দিয়ে দিয়ে , সব মিশ্রণ টা নিয়ে একটা ব্যাটার তৈরি করে ফেললাম |
ব্যাটার তৈরির পর একটু চেখে দেখলাম | ব্যাটারে নুন , ঝাল , মিষ্টির মাত্রা একদম ঠিকঠাক ছিল | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে , প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল খুব ভালোমতো গরম হয়ে উঠতেই , আঁচ কমিয়ে দিলাম | একটা করে কুমড়োফুল নিয়ে ব্যাটারে এপিঠ - ওপিঠ করে ডুবিয়ে নিয়ে কড়াইতে ছেড়ে দিলাম | ব্যাটার মাখানো ফুলগুলোর কোনোটার উপরে ছড়িয়ে দিলাম , রোস্টেড পোস্ত ...আর কোনোটার উপর রোস্টেড সাদা তিল |
আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে পোস্ত ছেটানো কুমড়োর ফুল , সাদা তিল ছেটানো কুমড়োর ফুল গুলো মুচমুচে করে ভেজে নিয়ে তুলে রাখলাম | এক একবারে ৪-৫টা করে ফুল ভেজে ফেললাম | তবে একটা বিশেষ কথা ....পোস্ত বা তিল রোস্ট না করলেও, পোস্ট - তিল ছেটানো কুমড়োফুলের বড়া একই রকম খেতে টেস্টি টেস্টি লাগবে | যার যেমন সুবিধা হবে , সে তেমনই করবে .....আসল কথা হলো ...রোস্ট করা পোস্ত আর তিলে একটা স্পেশাল গন্ধ তৈরি হয় |
এইভাবে সব ফুলগুলো ভেজে নিলাম | মুচমুচে আর সুন্দর স্বাদের ....পোস্ত ছেটানো আর তিল ছেটানো কুমড়োর ফুলের বড়া | বড়া গুলো থেকে সারা রান্নাঘর সুন্দর আর লোভনীয় গন্ধে ভরে গিয়েছে | সুন্দর ভাজা ভাজা গন্ধ পৌঁছে গেছে ...বাড়ির আনাচে - কানাচেও | আর সেই গন্ধ নাকে যেতেই , সব্বার চিৎকার ....কই ! একটা বড়া দাও ...একটা বড়া দাও নাঃ!! জিভের জল তো আর সামলাতে পারছি না ..........
আমার এক ডাকে সব্বাই পৌঁছে গেছে খাবার টেবিলে | খুব যত্ন করে আর আনন্দ করে সবাইকে পাতে পাতে এগিয়ে দিলাম গরম গরম ভাত আর সঙ্গে গরম গরম পোস্ত ছেটানো কুমড়োর ফুল ভাজা আর অবশ্যই সাদাতিল ছেটানো কুমড়োর ফুল ভাজা (kumro-phuler-bora) | বড়োই আনন্দ আর অনেক অনেক তৃপ্তি নিয়ে শুরু হলো সবার খাওয়া | সুন্দর স্বাদের আমেজ নিয়ে খাওয়া চললো এগিয়ে ......চললো এগিয়ে .......চললো এগিয়ে ..........
ভালো খান | সবাই ভালো থাকুন | সুস্থ থাকুন | আর অনেক অনেক আনন্দে থাকুন |
.jpg)





















Comments