আজ আমার রান্নাঘরে কেটেকুটে আনা ৫০০ গ্রামের মতো বান মাছ | খুব খুব টেস্টি টেস্টি এক মাছ | মাংসের মতো করে কষিয়ে কষিয়ে রান্না করলে কিন্তু অসাধারণ অসা..........ধারণ লাগে | তবে আমি আজ একটু চট জলদিই রেঁধে ফেলবো বান মাছের ঝাল | একটু ঝাল ঝাল করে বান মাছের ঝাল ....ভাবাই যায় না | স্বাদে দারুন , দারুন | সাদা গরম গরম ভাতে একটুকরো বান মাছের ঝাল ......ভাবতে ভাবতেই যেনো জিভে জল !!
মাছ প্রিয় বাঙালিদের কাছে প্রিয় নানা না........না ধরণের মাছ | আর বাঙালিরা এই নানাধরণের মাছের উপকরণগুলো রান্নাও করে নানাভাবে জমিয়ে জমিয়ে | আমাদের পাতে একটুকরো মাছের প্রয়োজন যেমন খুব বেশি, তেমনি প্রোটিনে সমৃদ্ধ এই উপকরণটি অবশ্যই বেশিরভাগ
বাঙালিদেরই প্রায় প্রতিদিনের পাতেই বিরাজমান ও থাকে | খুব খুবই পছন্দ যে !!!
এবার বলি কি , বান মাছ যেমন ভীষণ ভীষণ টেস্টি এক মাছ , তেমনি খুব উপকারী ও বটে | হাড় মজবুত করতে ,হাড়ে গ্রোথ আনতে দারুন কার্যকরী | তাই ছোট - বড়ো , আমাদের সবার জন্যই খুব খুবই উপকারী | আর তাইতো বাজার থেকে মাঝে মাঝেই রান্নাঘরে এনে তুলুন বান মাছ , আর জমিয়ে জমিয়ে মজার মজার টেস্টি টেস্টি মেনু তৈরি করুন আর ? আর কি ....খেয়ে ফেলুন .......!!!
উপকরণ :-
বান মাছ - ৫০০ গ্রামের কাছাকাছি , কেটেকুটে পরিষ্কার করা , জলে ধুয়ে নুন হলুদ মাখানো
পেঁয়াজ - ৩টি ছোট সাইজের , খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করে রাখা
রসুন - খুব ছোট্ট একটি , কোয়াগুলো খোসা ছাড়িয়ে রাখা
কাঁচালঙ্কা - ৪-৫টি
শুকনোলঙ্কা - গোটা ৪-৫ টি
হলুদগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
জিরেগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
লাল লঙ্কাগুঁড়ো - ১ ১.৫ চামচ
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো
নুন - প্রয়োজনমতো
চিনি - কয়েকদানা , রান্নায় স্বাদ বাড়িয়ে চমকে দিতে
আর একটা কথা , যদি কেউ পছন্দ করেন তো , রান্না শেষে রান্নায় এক চিমটে গরম মশলা গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতেই পারেন , না চাইলে দেবেন না ............
পদ্ধতি :-
রান্না শুরুর প্রথমেই মিক্সিতে নিয়ে নিলাম , কেটে রাখা পেঁয়াজের টুকরোগুলো , ছাড়ানো রসুনের কোয়াগুলো আর ৪-৫টা বোঁটা ছাড়ানো গোটা কাঁচালঙ্কা | দিয়ে দিলাম এক চিমটে নুন | মিহি করে বেটে নিয়ে রেখে দিলাম | মিক্সিতেই থাকলো |
এবার গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে প্রয়োজনমতো তেল দিলাম | তেল খুব ভালো মতো গরম হয়ে উঠলে , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে ছেড়ে দিলাম , নুন হলুদ মাখানো কয়েকটা বানমাছের টুকরো | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে , মাছগুলো ভেজে তুলে রাখলাম | এই ভাবেই বাকি মাছগুলো ও ভেজে নিলাম (baan macher jhol) |
এখন কড়াইতে থাকা মাছ ভাজার তেলের মধ্যেই রান্নার প্রয়োজনমতো আর একটু তেল দিয়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে তেল ভালোমতো গরম করে নিয়ে , দিলাম আঁচ কমিয়ে | কড়াইতে দিয়ে দিলাম মিক্সিতে রাখা পেঁয়াজ ,রসুন আর কাঁচালংকার পেস্ট টা | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কয়েকবার নেড়েচেড়ে নিয়ে সুন্দর এক গন্ধের জন্য মিশ্রনে ছেড়ে দিলাম ৪-৫টা গোটা শুকনোলঙ্কা | রান্নায় ভাজা শুকনোলঙ্কার গন্ধ , রান্নার আকর্ষণ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় | বিশেষ করে এই ঝাল - ঝোল রান্নায় |
পেঁয়াজ রসুন বাটার মিশ্রণ থেকে সুন্দর ভাজা ভাজা গন্ধ বেরিয়ে আসতেই , আঁচ কমিয়ে কড়াইতে দিয়ে দিলাম ১-১.৫ চামচ মতো হলুদগুঁড়ো , ২-৩ চামচ জিরেগুঁড়ো ১ চামচ মতো লাল লঙ্কারগুঁড়ো |রান্নায় চটপটা স্বাদ বাড়াতে দিয়ে দিলাম দু - চার দানা চিনি আর প্রয়োজনমতো নুন | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে সমস্ত ভালো করে কষতে লাগলাম | কড়াইতে থাকা মিশ্রণ থেকে তেল বার হতে শুরু করলেই , কড়াইতে দিয়ে দিলাম রসার পরিমান ভেবে নিয়ে প্রয়োজনমতো জল |
বেশি আঁচে রসা ফুটতে শুরু করলেই , কড়াইতে দিয়ে দিলাম ভেজে রাখা বান মাছের টুকরোগুলো | বাড়ানো আঁচে রান্না হতে থাকলো | রসা কমে আসতেই আঁচ কমিয়ে অল্পক্ষন রান্না মজতে দিলাম | রান্না হয়ে গেছে মনে হতেই আঁচ বাড়িয়ে রসা মাখো মাখো করে নিলাম | এবার রান্নায় দিয়ে দিলাম এক চিমটে গরম মশলার গুঁড়ো | চেখে নিলাম | দারুন দারুন লাগলো | সব ঠিকঠাক হয়েছে মনে হতেই গ্যাস বন্ধ করলাম | আমি খুব খুশি | আমার খুব পছন্দের মাছ যে |যাহোক , রান্নার সুন্দর গন্ধে রান্নাঘর ভরে গিয়েছে | জিভে তো জল এসেই যাচ্ছে | তবে খাবার টেবিলে যাওয়া পর্যন্ত তো আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে.............................
অবশেষে অপেক্ষার শেষ | আমরা সব্বাই খাবার টেবিলে | জমিয়ে জমিয়ে খাচ্ছি গরম গরম ভাত আর বান মাছের ঝাল | আমরা সবাই খুশি | খুব খুব খুশি |
আপনারাও খুব খুব খুশিতে থাকুন | ভালো ভালো খান | আর অনেক অনেক সুস্থ থাকুন |
Comments