পোনামাছের - লঙ্কাচেরা - তেলঝোল (Pona - Macher - Tel - Jhol)
- Kaveri Nandi

- Jul 31
- 4 min read

গোপাল ভাড় !!! এনিমেশন পিকচার !!! দারুন দারুন জনপ্রিয় !!! বাংলার ঘরে ঘরে , ছোট - বড়ো সবার ভীষণ ভীষণই প্রিয় !!! গোপাল ভাড় আমার ও বড়োই প্রিয় !!! কেন প্রিয় , কতখানি প্রিয় বলে বোঝাতে পারবো না , তবে .....দেখতে শুরু করলে চোখ সরে না , সময় যেন কোথা থেকে পার হয়ে যায় , বোঝাও যায় না | যাহোক আজ ও .....সকালের কাজ ও সারছি..... গোপাল ভাড় ও দেখছি , হঠাৎ গোপাল গিন্নির মধুর গলা , '' ওগো , বাজার থেকে একটু টাটকা পোনামাছ নিয়ে এস না , কালোজিরে - কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিয়ে নুন - হলুদে তেলকাটা ঝোল রাঁধবো , দারুন হবে কিন্তু !!! ''.....................

ব্যাস যেন ম্যাজিক হলো ! আমার ও কালোজিরে কাঁচালঙ্কা ফোরণে , পোনামাছের তেলকাটা ঝোল দিয়ে গরম গরম ভাত খেতে ইচ্ছে হলো ! আর যাহা হলো ইচ্ছা , কাজেও হলো তাই | ভেবে রাখা দুপুরের মেনু পাল্টে গেলো | রান্নাঘরে চলে এলো ৮ - ১০ টা মতো , একেবারে টাটকা কয়েকটা পোনামাছ | আমিও আজ রাঁধবো কালোজিরে কাঁচালঙ্কা ফোরণে ....'' পোনামাছের - লংকাচেরা - তেলঝোল '' |

স্বাদে - গুনে ভরা এক দারুন মেনু | গরম কালের দুপুরের জন্য সত্যি সত্যিই এক অসাধারণ মেনু | জিভের স্বাদ বাড়াতে , পেট ভালো রাখতে ...মানে অরুচি মুখে ..রুচি আনতে , খুবই সহজ অথচ মূলতঃ .....অসা........ধারণ একটি মেনু |

মাঝে মাঝে এই মুখরোচক হালকা মেনুগুলো , আমাদের বাড়ির সব্বাই খুবই পছন্দ করে | এই হালকা টেস্টি টেস্টি মেনুগুলো মনে হয় যেনো অমৃত সমান | আর অমৃত ....মানে অসাধারণ স্বাদের মেনু .....কার না ভালো লাগে !! ভালো লাগে বলেই তো .....আজকে আমাদের লাঞ্চের অমৃত মেনু লোভনীয় স্বাদে ভরা '' পোনামাছের - লঙ্কাচেরা - তেলঝোল '' | আজ লাঞ্চ তো জমিয়ে দেবোই ...আমার হালকা মেনু দিয়ে (Pona - Macher - Tel - Jhol) | মানে আমার তৈরি '' অমৃত '' দিয়ে ......
খুব আনন্দ আর এনার্জি নিয়ে সকালের কাজগুলো ঝপাঝপ ঝপাঝপ সেরে ফেললাম | টিফিন পর্ব ও আমাদের বেশ জমিয়েই হলো | জলখাবার সেরে সবাই নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো | আর আমিও চললাম আমার প্রিয় রান্নাঘরে ...দুপুরের প্রিয় রান্না ....'' পোনামাছের - লঙ্কাচেরা - তেলঝোল '' রাঁধতে ......
উপকরণ :-

পোনা মাছ - ৮-৯টা , খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে , জল ঝরিয়ে , নুন আর হলুদ মাখানো
কাঁচালঙ্কা - ৮-৯ পিস্ , লম্বালম্বি দু - ভাগে চিরে রাখা
কালোজিরে - ১ চা চামচ ....যথেষ্ট ...আরো অল্প দিলেও হবে ......
হলুদগুঁড়ো - ২-৩ চামচ
নুন - প্রয়োজনমতো

চিনি - ২-১ দানা , স্বাদে একটু চমক আনতে , কিন্তু দিতে হবে এমন কোনো কথা তো নেই ইইইইই
সর্ষের তেল - প্রয়োজনমতো , এই রান্নাটা সর্ষের তেলেই বেশি ভালো হয় , তবে যে কোনো তেলেই রান্না করা যায় ......আমাদের যেমন ইচ্ছা ......
পদ্ধতি :-
রান্নাঘরে ঢুকে দেখে নিলাম , জোগাড় যন্ত্র সব ঠিক ঠাক আছে কিনা ! হালকা রান্না ...আর উপকরণ ও খুবই হালকা | সব ঠিক ই আছে | গ্যাসে কড়াই চাপিয়ে দিলাম | কড়াইতে দিলাম , মাছ ভাজার জন্য প্রয়োজনমতো সর্ষের তেল | তেল ভালোমতো গরম হয়ে গেলে , আঁচ কমিয়ে নুন - হলুদ মাখানো কিছু মাছ কড়াইতে ছেড়ে দিলাম | আঁচ বাড়িয়ে মাছ এপিঠ ওপিঠ করে , খুব হালকা ভাবে ভেজেই তুলে নিলাম | বাকি মাছগুলো ও একইভাবে ভেজে ফেললাম | এই ঝোল রান্নায় ...মাছ খুব কড়া করে ভাজা হবে না কিন্তু | ঝোলের গুনাগুনটাই নষ্ট হয়ে যাবে | আসল স্বাদ খুঁজে পেতে , মাছগুলো হালকা হাতে এপিঠ - ওপিঠ করেই ভাজতে হবে | তবেই তো ঘটবে স্বাদের ম্যাজিক !!!

মাছ ভাজা সারা | এবার কড়াই এর মধ্যেই প্রয়োজনমতো আরো ও একটু তেল ঢেলে দিলাম | বেশি আঁচে তেল ভালোমতো গরম হয়ে উঠলে আঁচ কমিয়ে কড়াইতে ফোরণে দিলাম ১ চামচ কালোজিরে আর চেরা কাঁচালংকাগুলো | অপূর্ব সু - গন্ধ !! তেলের মধ্যে দিয়ে দিলাম ১- ১.৫ চামচ মতো হলুদগুঁড়ো , ২-১ দানা চিনি , ২-৩ চিমটে নুন | হালকা হাতে কড়াইয়ের সবকিছু একটু নেড়ে নিয়ে আঁচ বাড়িয়ে , কড়াইতে হালকা ভাজা মাছগুলো ছেড়ে দিলাম | ও হো হো ! কি স্পেশাল স্বাদের এক মো মো করা গন্ধ !! মাছ সমেত তেল বেশ গরম গরম হয়ে উঠেছে | এইবার আঁচ কমিয়ে ঝোলের পরিমান ভেবে কড়াইতে দিয়ে দিলাম জল |

আঁচ বাড়িয়ে দিলাম | পোনামাছের - লঙ্কাচেরা - তেলঝোল টগবগা বগ - টগবগা বগ ফুটছে আর ঝোলের মনকাড়া লোভনীয় গন্ধ ও চারিদিকে ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে | সারা বাড়িতেই যেনো ছড়িয়ে যাচ্ছে জিভে জল আনা এক অদ্ভুত অনুভূতি | আঁচ কমিয়ে ঝোল একটু মজতে দিলাম | এই তেলকাটা ঝোল থাকলে , মনে তো হয় না আর অন্য কিছু খাই | এক পদেই হবে খাওয়া শেষ | মন ও হবে খুশ খুশ | ভাবতে ভাবতে খেয়াল করলাম , আমার রান্নাও তৈরি | একটু চেখেই ফেললাম | বাঃ ! বাঃ ! বড়োই সুন্দর ! বড়োই স্বাদে ভরা (Pona - Macher - Tel - Jhol)!

দুপুরের টেবিলে সবাই খাওয়া শুরু করলাম ......গরম গরম ভাত আর গরম গরম '' পোনামাছের - লঙ্কাচেরা - তেলঝোল '' দিয়ে | কোনো কথাবার্তার আওয়াজ নেই | শুধু টেবিলে হয়ে চলেছে , সপসপাসপ খাওয়ার শব্দ , আর চারিদিকে হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে , অনেক অনেক তৃপ্তির আমেজ | আমি খুব খুব খুশি | তবে !! .তবে ,...হাজার সত্যির সবচেয়ে বড়ো সত্যি টা ........................................................................,
হলো ....খেয়ে দেয়ে বাড়ির সবাই তৃপ্তি পেলে ...সব চাইতে বড়ো তৃপ্তি র আমেজটা ...বোধহয় একমাত্র আমারইইইইইইইইই ...........
ভালো ভালো খেয়ে দেয়ে তৃপ্তিতে ভরুন | সুস্থ থাকুন | থাকুন অনেক অনেক অ.........নেক আনন্দে |
.jpg)



Comments